সাক্ষ্য দিতে ডাকার কথা মিথ্যে: ব্লগার অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী

২৪ ডিসেম্বর,২০২০

সাক্ষ্য দিতে ডাকার কথা মিথ্যে: ব্লগার অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
আরটিএনএন
ঢাকা: প্রায় ছয় বছর আগে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত ব্লগার অভিজিৎ রায়ের হত্যা মামলার শুনানিতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তাকে কোন সমন পাঠানোর দাবি অস্বীকার করেছেন স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ সরকার, পুলিশ বা দূতাবাসের কেউ কখনই তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।

মঙ্গলবার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেছেন যে রায়ের স্ত্রীর কাছে মামলায় উল্লেখ করা ঠিকানায় আদালতের সমন পাঠানো হয়েছিল।

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্লগার অভিজিৎ রায় বাংলাদেশে গিয়েছিলেন এবং ঢাকায় বইমেলায় চলার সময় সেখানে তার ওপর হামলা চালানো হলে তিনি নিহত হন। এ সময় তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতর আহত হন। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন।

তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন আদালতের কোন সমন তিনি পেয়েছেন কি-না। জবাবে রাফিদা আহমেদ বন্যা বলেন, এ রকম কোন কিছুই তিনি জানেন না।

তিনি বলেন, গত ছয় বছরে আমার সঙ্গে আসলে বাংলাদেশ থেকে কেউ যোগাযোগ করেনি। কোন দিনই না। বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেও না, বাংলাদেশ সরকারেরও কেউ নয়।

তাকে কখনো আদালতে গিয়ে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য বলা হয়েছে কি-না, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশ্নই আসে না। কোনভাবেই না।

আমি তো দেখলাম যে বলা হচ্ছে, আমার সঙ্গে নাকি তারা ফোনে কথাও বলেছে বিশেষ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এগুলো সবই মিথ্যে কথা। ২০১৫ সালে আমি যখন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে ব্রীফিং এর জন্য যাই, সেনেটরদের সামনে, তখন বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঁচ হতে সাতজনকে পাঠানো হয়েছিল আমি কী বলছি শুনতে।

এমনকি সেই সময়েও তারা কেউ আমার সঙ্গে অফিশিয়ালি কথা বলেনি। আমি আমেরিকায় থাকি, আমি পাবলিকলি অনেক কিছু লেখালেখি করি। আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা কোন কঠিন ব্যাপার নয়। কিন্তু কোনদিন কেউ কোথাও থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। শুধুমাত্র এফবিআই আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে।

তিনি বলেন, তার নিরাপত্তার কথা ভেবেই এফবিআই তাকে বলেছিল সাবধানে থাকতে। কোথাও গেলে তাদেরকে অবহিত করতে।

রাফিদা আহমেদ বন্যা বলেন, তিনি এই ঘটনার তদন্ত এবং বিচার চেয়ে বহুবার লিখেছেন, বহুবার অভিযোগ করেছেন। তার সঙ্গে যে কেউ কখনও যোগাযোগ করেনি বাংলাদেশ থেকে, সে কথাও জানিয়েছেন।

এমনকি দেশে যাদেরকে ডাকা হচ্ছে সাক্ষী দেবার জন্য, তাদেরকেও আমি বলেছি বলার জন্য কেন আমার কাছ থেকে কখনও কিছু জানতে চায়নি কেউ। এবং কেন আমাকে কখনও বাংলাদেশ থেকে কেউ কিছু জানায়নি।

ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন সাক্ষী হওয়ার পরও এটা কেন ঘটছে জানতে চাইলে তিনি বলেন যে এ বিষয়ে তার কোন ধারণাই নেই।

আর বাংলাদেশের কাজকর্ম নিয়ে আসলে যৌক্তিকভাবে কোন কিছু চিন্তা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ওরা এমন আচরণ করে, মনে হয় আমার কোন অস্তিত্বই নেই।

তিনি নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছেন না, এমন যেসব খবর বেরিয়েছে, সেগুলো কতটা সঠিক - এই প্রশ্ন করা হয়েছিল রাফিদা আহমেদ বন্যাকে।

এর উত্তরে তিনি বলেন, এ রকম মিথ্যে কথা যদি কেউ বলে কর্তৃপক্ষ থেকে, তাহলে তো আর কিছু বলার নেই। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। আমার সঙ্গে কেউ কখনও, কোনওদিন যোগাযোগ করেনি। সেখানে নিরাপত্তার কথা বলে না যাওয়ার প্রশ্ন তো উঠতেই পারে না।

এরকম পরিস্থিতিতে এই হত্যাকান্ডের বিচার পাবেন বলে কি মনে করেন তিনি?

রাফিদা আহমেদ বন্যা বলেন, আমি প্রথম থেকেই বলে এসেছি যে, বাংলাদেশ থেকে বিচার আমি আর আশা করি না।

আমার হিসেবে যদি ভুল হয়ে না থাকে, প্রধান যে দুজন আসামী, মেজর জিয়া এবং অন্য আরেকজন, তাদের কে কখনো ধরা হয়নি, তারা কোথায় কেউ জানে না। অথচ এই মেজর জিয়া নাকি সেদিন সশরীরে ছিল সবকিছুর ব্যবস্থা করতে,ওই আক্রমণের ব্যবস্থা করতে।

তিনি বলেন, সেই ২০১৫ সাল থেকে শুনছি এই ঘটনায় সাতজনকে ধরা হয়েছে, ছয়জনকে ধরা হয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন খবর এসেছে। তারপর আবার দেখা গেছে, সে খবর উল্টেও যাচ্ছে।

শরীফ নামে একজনকে ধরে তারা বললো সে নাকি মাস্টারমাইন্ড ছিল এই হামলার । অথচ দুমাস পর তাকে জেলে রেখে ক্রসফায়ারে দিয়ে মেরে ফেলা হলো। তো আপনি এরপর এদের কাছ থেকে আর কী বিচার আশা করবেন।

মন্তব্য

মতামত দিন

জাতীয় পাতার আরো খবর

ফায়ার সার্ভিস ভবনে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্কআরটিএনএনঢাকা: রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ ব্যবসায়ীরা ফায়ার সার্ভিসের ভবনে . . . বিস্তারিত

আগুন লাগা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সন্দেহ

রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত নিয়ে সন্দেহ করছেন ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে মার্কেটে আগ . . . বিস্তারিত

 

 

 

 

 

 

ফোন: +৮৮০-২-৮৩১২৮৫৭, +৮৮০-২-৮৩১১৫৮৬, ফ্যাক্স: +৮৮০-২-৮৩১১৫৮৬, নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০-১৬৭৪৭৫৭৮০২; ই-মেইল: rtnnimage@gmail.com