বেড়েই চলেছে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার

০৯ সেপ্টেম্বর,২০২২

বেড়েই চলেছে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার

নিজস্ব প্রতিবেদক
আরটিএনএন
ঢাকা: শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে এগিয়ে আছে নারী শিক্ষার্থীরা। এ বছরে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৪৫ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যাকারীদের অবস্থান বিবেচনায় সবার শীর্ষে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। আর প্রেমঘটিত কারণেই সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা হচ্ছে।

আজ শুক্রবার এমন তথ্যই জানিয়েছে আত্মহত্যা, নারী নির্যাতন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ করা আঁচল ফাউন্ডেশন। এক সংবাদ সম্মেলনে ‘বেড়েই চলেছে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার; আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়া কতটা জরুরি?’ শীর্ষক সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে সংস্থাটি।

সংস্থাটি বলছে, তরুণ প্রজন্মকে যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্যে মানসিকভাবে তৈরি করা এবং তাদেরকে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল করে তোলার পাশাপাশি আঁচল ফাউন্ডেশনের একটি অন্যতম লক্ষ্য দেশে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি এটি তরুণ প্রজন্মের উপর জরিপ পরিচালনা ও আত্মহত্যার তথ্যও সংগ্রহ করে, যেন তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের সার্বিক অবস্থা নিরূপণ করা যায়। সেই সূত্র ধরে দেশের দেড় শ’ জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টাল থেকে এবারের সকল প্রকার আত্মহত্যার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

সমীক্ষার তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের প্রথম আট মাসের আত্মহত্যার সংখ্যা আমাদের জন্য উদ্বেগ তৈরি করতে সক্ষম। এ বছরে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৪৫ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।

দীর্ঘ আট মাসব্যাপী চলমান ডাটা সমন্বয়ের নানাবিধ উল্লেখযোগ্য ফলাফল উপস্থাপন করেন ফারজানা আক্তার লাবনী।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরি, নারায়ণগঞ্জ জেলার এডিসি (শিক্ষা ও আইসিটি ডিভিশন) আজিজুল হক মামুন এবং আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ।

পত্রিকা থেকে সংগৃহীত আত্মহত্যার ঘটনা সংখ্যা অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে ৩৬৪ জন আত্মহননের পথ বেছে নেয় যারা তাদের জীবদ্দশায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছিলেন। এদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, মাদরাসা, নার্সিং প্রভৃতি বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থী রয়েছেন। লক্ষ্যণীয় যে, ৩৬৪ জন আত্মহত্যাকারীর মধ্যে ১৯৪ জনই ছিলেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন কলেজ শিক্ষার্থীরা যার সংখ্যা ৭৬ জন। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহননকারীর সংখ্যা ৫০ জন। তবে মোট আত্মহননকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদরাসায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীও ছিলেন ৪৪ জন।

সমীক্ষায় উঠে আসে বিগত আট মাসে মোট আত্মহননকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫০ জন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, যাদের মধ্যে পুরুষ শিক্ষার্থী ৬০.০০ শতাংশ এবং নারী শিক্ষার্থী ৪০.০০ শতাংশ। কলেজশিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৬ জন এই পথ বেছে নেয় যাদের মাঝে ৪৬.০৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৫৩.৯৫ শতাংশ নারী। সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৯৪ জন স্কুলগামী শিক্ষার্থী বিগত আট মাসে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩২.৯৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৬৭.০১ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী। এমনকি মাদরাসাশিক্ষার্থীরাও আত্মহত্যার মাধ্যমে জীবনাবসানের পথ বেছে নিয়েছে যা সংখ্যায় ৪৪ জন। তাদের মধ্যে ৩৯.২৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৬০.৭১ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী।

আত্মহত্যাকারীদের অবস্থান বিবেচনায় সবার শীর্ষে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। আত্মহননকারীদের মধ্যে ঢাকায় গত ৮ মাসে শতকরা ২৫.২৭ শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন। চট্টগ্রাম বিভাগে ১৬.৪৮ শতাংশ এবং খুলনা বিভাগে ১৪.০১ শতাংশ আত্মহত্যা করে। দেশের অপরপ্রান্তে রংপুর বিভাগে আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থী রয়েছেন ৮.৭৮ শতাংশ। এছাড়া বরিশাল বিভাগে ৯.৬২ শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে ৭.৪২ শতাংশ এবং রাজশাহী বিভাগে ১৪.০১ শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। অপরদিকে, সিলেট বিভাগে তুলনামূলকভাবে কম সংখ্যক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন, যা ৪ শতাংশ।

মন্তব্য

মতামত দিন

প্রধান খবর পাতার আরো খবর

ইবিতে র‍্যাগিং: অভিযুক্তের ‘পা ধরে ক্ষমা’ চেয়েছেন ছাত্রলীগ নেত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধিআরটিএনএনকুষ্টিয়া: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটির ডাকে চতুর্থবাবের মতো ক্যাম্ . . . বিস্তারিত

করোনার অজুহাতে কওমি মাদরাসা বন্ধ করতে চায় সরকার

নিউজ ডেস্কআরটিএনএনঢাকা: করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় গেল বছরের ১৮ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ক . . . বিস্তারিত

 

 

 

 

 

 

ফোন: +৮৮০-২-৮৩১২৮৫৭, +৮৮০-২-৮৩১১৫৮৬, ফ্যাক্স: +৮৮০-২-৮৩১১৫৮৬, নিউজ রুম মোবাইল: +৮৮০-১৬৭৪৭৫৭৮০২; ই-মেইল: rtnnimage@gmail.com