Image description

আন্তর্জাতিক ডেস্ক 
আরটিএনএন: ফিলিস্তিনের সশস্ত্র রাজনৈতিক বাহিনী হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে গাজায় বর্বর অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইল। হামাসের সদর দপ্তর আল-শিফা হাসপাতালের নিচে- এই অজুহাতে সেখানেও দফায় দফায় হামলা চালায় ইসরাইল। একপর্যায়ে গাজার সবচেয়ে বড় এই হাসপাতাল দখল করে তল্লাশি শুরু করে।

হাসপাতালের ‘বেজমেন্টে’ টানেল খুঁজে পাওয়ার দাবি করে ইসরাইল বাহিনী। সেই টানেলকেই হামাসের অস্ত্র, গোলাবারুদের কারখানা বলেও নিশ্চিত করে ইসরাইল সেনারা। তবে টানা ৮ দিনেও হাসপাতালের অভ্যন্তরে কোনো সুড়ঙ্গ খুঁজে পায়নি ইসরাইল বাহিনী। সোমবার এক বিবৃতিতে এমনটাই বলছেন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আল-বুরশ। ইসরাইলের দাবিগুলোতে ‘পুরোপুরিভাবে মিথ্যে’ বলেও প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। আলজাজিরা, বিবিসি।

পরিচালক বুরশ বলেন, ‘তারা আট দিন ধরে হাসপাতালে রয়েছেন এবং এখনো পর্যন্ত তারা কিছুই খুঁজে পায়নি।’ গাজার হাসপাতালগুলোর জেনারেল ডিরেক্টর মোহাম্মদ জাকুত বলেন, ‘আমি ইসরাইলি বাহিনীর মিথ্যা অভিযোগকে প্রত্যাহার করছি। আমাদের বন্দুকের মুখে হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।’ আগেরদিন রোববারই আল-শিফা হাসপাতালের নিচে হামাসের সুরক্ষিত সুড়ঙ্গের ভিডিও প্রকাশ করেছে ইসরাইল সেনারা। ভিডিও প্রকাশ করে ইসরাইল বলছে, হামাসের এ সুড়ঙ্গটি ৫৫ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার গভীর। সুড়ঙ্গের মুখে বিস্ফোরণরোধী দরজাও আছে। কংক্রিটের ছাদ দেওয়া একটি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পর সেই দরজা দেখেছে সেনারা। তবে দরজার ওপাশের বর্ণনা দেওয়া হয়নি। সোমবার আল-শিফা হাসপাতালে ইসরাইলি বন্দিদের আটক করার আরেকটি সিসিটিভি ভিডিও প্রকাশ করেছে ইসরাইল। 

প্রথম ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ৭ অক্টোবর সকাল ১০টা ৫৩ মিনিটে একটি শর্টস এবং ফ্যাকাশে নীল শার্ট পরা একজনকে হাসপাতালের প্রবেশদ্বার দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যায়, পাঁচজনের মধ্যে তিনজনই ছিলেন সশস্ত্র। ১০টা ৫৫ মিনিটের আরেকটি ফুটেজে দেখা যায়, শর্টস পরিহিত একজন আহত ব্যক্তিকে সাতজন লোক স্ট্রেচারের সাহায্যে একটি কক্ষে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে চারজন সশস্ত্র ব্যক্তি ছিলেন। তবে ইসরাইলের প্রকাশ করা এসব ভিডিওর সত্যতা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বলে জানিয়েছে এএফপি। একই কথা বলেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও।

রোববার ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বিভাগ দাবি করে, হামাস গাজার হাসপাতালগুলোকে অপব্যবহার করছে। তাদের এক সৈন্যকে মৃত্যুদণ্ডসহ দুই বিদেশি জিম্মিকে আটক করা হয়েছে। ইসরাইলি নিহত সেই সৈন্যের নাম নোয়া মার্সিয়ানো (১৯)। তার মৃতদেহ গত সপ্তাহে শিফা হাসপাতালের কাছে উদ্ধার করা হয়েছিল। প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী নোয়াকে হামাস সন্ত্রাসীরা শিফা হাসপাতালের দেওয়ালের ভেতরে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে তাকে হত্যা করা হয়।’ তবে হামাস ইসরাইলের দাবিকে অস্বীকৃতি জানায়। বরং ইসরাইলের গুলিতেই নিহত হয়েছেন সে সেনা বলে দাবি করেন তারা। কেননা তার মাথায় একটি ক্ষত ছাড়া অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে হামাস দাবি করে, কিছু জিম্মিকে তারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন।