Image description

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

আরটিএনএন: জামায়াতে ইসলামীর আমিরকে জড়িয়ে সমালোচনা করে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের ছেলে ও মৌলভীবাজার বিএনপির সাবেক সভাপতি এম নাসের রহমান।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানকে নিয়ে একটি পোস্ট করেন। পোস্টের পরপরই কমেন্টে পক্ষে ও বিপক্ষের ঝড় উঠে। হঠাৎ করেই মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতার এমন ফেসবুক স্ট্যাটাস জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। পরে পোস্টটি ডিলেট করে দুঃখ প্রকাশ করে পুনরায় পোস্ট করেন নাসের রহমান।

সমালোচনা করে নাসের রহমান লিখেছেন- ‘জামাত ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ডা. শফিকুর রহমান এর আজকাল বক্তব্য শুনলে মনে হয় উনি বুঝি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বোনে গেছেন ! প্রায় প্রত্যেকদিন উনার বিভিন্ন বয়ান শুনলে তাই তো মনে হয় । এত নসিহত তিনি কেনো করছেন বোধগম্য হচ্ছে না। গতকাল উনি বলেছেন যে গত ১৫ বৎসর জামাত ইসলামীর চেয়ে বেশি নির্যাতিত কোনো দল হয় নাই !! এই ধরনের হাস্যকর বক্তব্য উনার কাছ থেকে আশা করা যায় না ! জামায়াত ইসলামীর নেতাকর্মীর সংখ্যা কি বিএনপি থেকেও বেশী !? বিএনপির যে কয়েক লক্ষ নেতাকর্মী হাজার হাজার মামলায় পর্যন্ত হয়েছে এবং জেল খেটেছে তার ২০ শতাংশের কাছেও কি জামাত নেতাকর্মী পতিত আওয়ামী লাগ কর্তৃক হেনস্তা হয়েছে ? স্বৈরাচারী হাসিনার বিরুদ্ধে বিএনপির ১৫ বৎসরের বিভিন্ন প্রকারের আন্দোলন আর অত্যাচারকে খাটো করার উদ্দেশ্য এই ধরনের অবাস্তবিক বক্তব্য দিয়ে উনি দেশবাসী সহানুভূতি পাওয়ার এক বৃথা চেষ্টা করেছেন!’

নাসের রহমান লিখেছেন, ‘ডা. শফিকুর যে সহসা নির্বাচন চান না সেটা বেশ পরিস্কারভাবে দেশবাসী বুঝে! এবং কেনো সেটা চান না, সেইটা বিএনপি ভালো করে বুঝে। কিন্তু উনার খায়েশ অনুযায়ী তো আর দেশের পটপরিবর্তন হবে না !কারণ বর্তমানে বাংলাদেশের একমাত্র রাজনৈতিক শক্তি হচ্ছে বিএনপি। এবং বিএনপির দাবি অনুযায়ী আগামী নির্বাচন যৌক্তিক সময়ের মধ্যে করতে অন্তর্বর্তীন কালীন সরকার বাধ্য হবে ! অন্য কোনো দলের সেটা দীর্ঘায়িত করার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে হয় না !’

এবিষয়ে এম নাসের রহমান বলেন, না আমি এ পোষ্টে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। ওইখানে আমির সাহেব একটা কথা বলেছেন যে, সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন ফ্যাসিষ্টের সময় জামায়াতে ইসলামী। এবিষয়টা নিয়ে আমার প্রশ্ন। বিএনপির হাজার হাজার-লাখ লাখ নেতাকর্মী খুন, ঘুম, মামলা-হামলা নানাভাবে হয়রানি ক্রস ফায়ারে নিহত হয়েছে। ঘুম খুনের শিকার হয়েছে সবচেয়ে বিএনপি। ৬২৬ জন ঘুম খুন হয়েছে এর মধ্যে সাড়ে পাঁচশ বিএনপির নেতাকর্মী। সর্বশেষ আন্দোলনে ৪২২ জন বিএনপির নেতাকর্মী মারা গেছে।

নাসের রহমান বলেন- জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির সবচেয়ে ক্লোজেষ্ট সম্পর্ক যদি কেউ থেকে থাকে সেটা ছিল সাইফুর রহমানের সঙ্গে এবং আমারও জামায়াতের সঙ্গে কোনো সম্পর্কের ঘাটতি নেই। জামায়াতের আমির মৌলভীবাজারী। আমিও মৌলভীবাজারী। উনি আমার মুরুব্বি মানুষ ঠিক আছে। কিন্তু উনি একথা বলতে পারেন, সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত জামায়াতে ইসলামী। কে বলছে জামায়াতে ইসলামী বেশি নির্যাতিত হয়েছে গত বছরে? উনার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমি এ স্টেটমেন্ট দিয়েছি। এবক্তব্য কোনো দলের বিরুদ্ধে নয়। জামায়াতের অনেক বড় বড় নেতার সঙ্গে আমার খুব সৃহৃদ সম্পর্ক আছে।

আব্দুল্লাহ আবু তাহের, মিয়া গোলাম পরওয়ার এর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আমার। এক সঙ্গে এমপি ছিলাম। তারপরে মৌলভীবাজারে জামায়াতের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমার খুব মধুর সম্পর্ক। আই হ্যাভ নাথিং এগেইনিষ্ট জামায়াত।