
নিজস্ব প্রতিবেদক
আরটিএনএন: কোটা আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ায় কেরানীগঞ্জের ইস্পাহানী আবাসিক এলাকায় নদীধারা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার মসজিদ পরিচালনা কমিটি তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। ইমামকে অব্যাহতির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে।
এছাড়া অব্যাহতির বিষয়টি নিজের ফেসবুক আইডিতে মাওলানা গিয়াস উদ্দিন আল মামুন শেয়ার করলে নেটিজেনরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আবু সায়েদ তালুদকার নামে একজন লেখেন, ‘ইনশাআল্লাহ রিজিকের মালিক আল্লাহ। সামনে আপনার জন্য আরও ভালো কিছু রেখেছেন।
তামিম আদনান লিখেছেন, ‘কমিটির দায়িত্বশীল মনে হয় মানুষ নয় আওমী লীগ!’
যারা চাকরি থেকে ইমামকে অব্যাহতি দিয়েছেন তাদের সমালোচনা করে মাসুম নামে আরেকজন লিখেছেন, আপনি যেন এভাবে সব সময় সত্যটা তুলে ধরতে পারেন। এসব জালেমদের ইনশাআল্লাহ একদিন বিচার হবে।
ইমরান হোসেন লিখেছেন, ‘ধিক্কার জানাই ওইসব জালিম কমিটিকে! আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিক’।
ইসমাইল হোসেন লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, রিজিকের মালিক আল্লাহ, হতাশ হবেন না, মসজিদ কমিটির গোলামি করবেন না। আল্লাহ উত্তম ফয়সালাকারী’।
নুরুল আমিন লেখেন, ‘সমাজের প্রতিটা স্তরে বর্তমানে এসব চলতেছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বললেই ইমাম মুয়াজ্জিনের ওপর হামলা, এমনকি চাকরিও হারাতে হয়। আমাদের এলাকায় প্রায় এক মাস মুয়াজ্জিন নেই। আল্লাহ এদের বিচার করুক।
ওমর ফারুক লিখেছেন, এটা অমানুষদের কাজ।
শরীফুল ইসলাম সাকী লিখেছেন, ‘যেখানে হক কথা বলা যায় না, এমন জায়গায় খেদমত না করাই শ্রেয়।
এদিকে শুক্রবার জুমার নামাজের পূর্বে ইমামকে অব্যাহতির খবরে মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। অনেক মুসল্লি ঘটনার প্রতিবাদে ওই মসজিদ থেকে বেরিয়ে যান। মুসল্লিদের একাংশ মসজিদের ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
কোটা আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য, ইমামকে অব্যাহতি দেওয়ায় মুসল্লিদের বিক্ষোভ
পরে স্থানীয় মেম্বার দেলোয়ার হোসেন দিলু, নদীধারা আবাসিক এলাকার সহ-সভাপতি হাজী হাসান, আগানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন এ বিষয়ে ‘সহি’ সমাধানের আশ্বাস দিলে মুসল্লিরা শান্ত হন এবং নামাজ আদায় করেন।
মুসল্লিদের অভিযোগ, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের খামখেয়ালিতে দুই দিন পরপর মসজিদের ইমামকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কোনো বিষয়ে ‘হক’ কথা বললেই ওই ইমামকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান বলেন, ইমাম সাহেব গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় কোটা আন্দোলনের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে সরকারবিরোধী নানা বক্তব্য দেন। উসকানিমূলক কথাবার্তা বলেন। এজন্য তাকে কমিটির সিদ্ধান্তে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মসজিদের অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মাওলানা গিয়াস উদ্দিন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।