
পিরোজপুর প্রতিনিধি
আরটিএনএন: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা যেন এখন দালালনির্ভর হয়ে উঠেছে। হাসপাতালের ভেতরে সক্রিয় একটি ওষুধ কোম্পানির দালাল চক্রের কারণে চিকিৎসকরা স্বাধীনভাবে ভালো ও মানসম্পন্ন ওষুধ লিখতে পারছেন না। এতে সাধারণ রোগীরা যেমন মানসম্পন্ন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের কতিপয় কর্মচারী এবং বাইরের একাধিক ওষুধ কোম্পানির দালাল একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তুলেছে। তারা প্রভাব খাটিয়ে চিকিৎসকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ লিখিয়ে নিচ্ছে। এ কারণে অনেক সময় রোগীদের প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ওষুধের পরিবর্তে কম কার্যকর ও নিম্নমানের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, যা রোগীদের সুস্থতার পরিবর্তে আরও জটিলতা সৃষ্টি করছে।
একজন ভুক্তভোগী রোগীর অভিভাবক জানান, ডাক্তার সাহেব ওষুধ লিখে দিয়েছেন, কিন্তু বাইরে গিয়ে দেখি সেই ওষুধ সাপ্লাই করে মাত্র একটা ফার্মেসি। তাও অনেক বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়। অন্য দোকানে গেলে বলে ওষুধ নেই। এটা কি রোগীর জন্য ন্যায্য?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করি; কিন্তু দালালরা আমাদের ওপর চাপ দেয়। ভালো ওষুধ লিখলেই নানা কথা শুনতে হয়, এমনকি বদলি কিংবা চাকরি হারানোর হুমকিও দেওয়া হয়।
স্থানীয় সুশীল সমাজ ও সচেতন নাগরিকরা দ্রুত প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দালাল চক্র নির্মূল ও স্বচ্ছ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মঠবাড়িয়ার সাধারণ জনগণের প্রশ্ন- একটি সরকারি হাসপাতালে যদি এমন চিত্র বিরাজ করে, তবে তারা কোথায় যাবে চিকিৎসা পেতে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এ অনিয়ম আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
Comments