
নিজস্ব প্রতিবেদক
আরটিএনএন: রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে মেলা নিয়ে বিরোধের জেরে বিএনপির মনির চেয়ারম্যান গ্রুপের হামলায় চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মুসলিমবাগ মাঠের ঘাটের দুই নম্বর গলিতে দুই শতাধিক সশস্ত্র লোক অতর্কিত হামলা চালায়।
হামলায় আহতরা হলেন— মো. পারভেজ তুষার ওরফে বাবু (৩২), নূর হোসেন (৩৮), মোবারক (৩৮) ও রাব্বি (২৩)। তাদের একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ভর্তি আছেন এবং তিনজন মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এখন বাসায়।
ঢামেকে চিকিৎসাধীন পারভেজ তুষার জানান, তিনি বিএনপির ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহসভাপতি। তিনি আমান উল্লাহ আমানপন্থি রাজনীতি করেন। মেলা ইজারার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে মনির চেয়ারম্যান গ্রুপ তাকে হুমকি দিতে শুরু করে।
তুষার জানান, মঙ্গলবার বিকালে মেলার মাঠ পরিদর্শন শেষে তিনি এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এ সময় মনির চেয়ারম্যান গ্রুপের কয়েকজন সদস্য এসে তাকে হুমকি দেন। এরপর তারাবির নামাজ শেষে আমাকে একা পেয়ে বাড়ির সামনে মনির রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলে তার গ্রুপের ফারুক আহমেদ, মো. সিদ্দিক, পারভেজ, রহমত উল্লাহ বশির, আমির হোসেন ও খায়ের উদ্দিনসহ দুই শতাধিক লোক হামলা চালান।
তুষারের অভিযোগ, মনির চেয়ারম্যান আমাকে মেরে ফেলার নির্দেশ দেন। এজন্যই তারা চাপাতি ও ছুরি দিয়ে আমার মাথা, পিঠ ও বুকে আঘাত করেন। রাব্বি, মোবারক ও নূর হোসেনকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতে ১১-১২টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তারা ধারালো অস্ত্র, লোহার রড ও লাঠি নিয়ে চারজনকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। সংঘর্ষের সময় নূর হোসেনের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
পারভেজ তুষারের বোন রুবিনা যুগান্তরকে বলেন, হঠাৎ বাইরে চিৎকার শুনে দেখি, মনির চেয়ারম্যানের লোকজন আমার ভাইকে রাস্তায় ফেলে লাথি-ঘুসি মারছে। চাপাতি দিয়ে তার মাথায় ও শরীরে আঘাত করে।
তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা শুধু মারধর করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা আমাদের বাসায় ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। কিস্তির ৮০ হাজার টাকা, এক ভরি সোনা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়।
কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি আমিরুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় ২১ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি এবং দেড়শজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এজাহারভুক্ত ১৩ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে এবং দ্রুত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
Comments