
খেলা ডেস্কে
আরটিএনএন: ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর। ৬০-এ পৃথিবী ছেড়ে দূর আকাশের তারা হয়ে যান দিয়েগো ম্যারাডোনা। ফুটবল-রোগে যিনি ভুগেছেন সারা জীবন, হৃদরোগ কেড়ে নেয় তার প্রাণ। চার বছর পর আবার সংবাদের শিরোনামে আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার। শুরু হয়েছে অবহেলাজনিত কারণে তার মৃত্যুর বিচার।
মঙ্গলবার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা লুকাস ফারিয়াস, যিনি ম্যারাডোনার মৃত্যুর দিন সবার আগে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বিস্ফোরক এক স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, মৃত্যুর সময় ম্যারাডোনার কক্ষে কোনো চিকিৎসার সরঞ্জামই ছিল না!
আর্জেন্টিনার সান ইসিদরো আদালতে চলছে ম্যারাডোনার চিকিৎসায় নিয়োজিত সাতজনের বিরুদ্ধে বিচার। এটিকে বলা হচ্ছে এক ধরনের ‘হরর থিয়েটার’। লুকাস বলেছেন, ‘কোনো সিরাম ছিল না, ছিল না চিকিৎসার ন্যূনতম ব্যবস্থাও। ডিয়েগো ম্যারাডোনার যে বিষয়টি সবার আগে আমার নজর কেড়েছে সেটা হলো, তার মুখের অবস্থান এবং তলপেট এতটাই ফুলেছিল যে মনে হবে বিস্ফোরণ হবে। ওভাবে ম্যারাডোনাকে দেখে আমি চমকে গিয়েছিলাম।’
বুয়েনস এইরেসের ভাড়া করা যে বাসায় তার চিকিৎসা চলছিল, যেখানে ম্যারাডোনাকে সুস্থ করে তোলার জন্য নিয়োজিত ছিলেন যারা, নিজেদের দায়িত্ব পালনে তাদের অবহেলা ছিল অমার্জনীয়, এমন অভিযোগের কূলকিনারা করতে এই বিচার।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন একজন শল্যচিকিৎসাবিদ, মনোবিদ, চিকিৎসা ও সেবাবিষয়ক সমন্বয়ক, চিকিৎসক, নার্স। আরেক নার্স গিসেলা দাহিয়ানা মাদ্রিদের বিচার আলাদাভাবে শুরু হবে জুলাইয়ে। চার মাস ধরে চলবে বিচার কার্যক্রম। একশরও বেশি সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দেবেন।
তাদের মধ্যে রয়েছেন ম্যারাডোনার পরিবারের সদস্য এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসক। অভিযুক্ত সাতজন যদি দোষী সাব্যস্ত হন, আট থেকে ২৫ বছরের জন্য কারাদণ্ড হতে পারে তাদের।
সরকারি কৌঁসুলিরা ম্যারাডোনার চিকিৎসায় নিয়োজিত ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে পেশাদারত্বের ঘাটতি এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন। পর্যাপ্ত ও যথাযথ চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হলে হয়তো ম্যারাডোনার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আরও বাড়ত, ২০ জন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের একটি প্যানেলের এই অভিমত মামলার কার্যক্রমে অনুঘটক হিসাবে কাজ করছে।