Image description

নিউজ ডেস্ক
আরটিএনএন: গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর আগ্রাসনের প্রতিবাদে ঢাকার রাজপথে নামছেন ছাত্র-জনতা। আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে আয়োজিত এক বিক্ষোভে এক শিক্ষার্থীকে কাথা কাটিকাটির ঘটনা ঘটেছে। এক পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়ান  উপস্থিত শিক্ষার্থীরাই, এতে গুরুতর আহত হন ২ জন।  

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, বেলা ১১টার পর থেকেই টিএসসি চত্বরে জমতে থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন কলেজ ও নার্সিং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। মূলত বিকেলের 'মার্চ ফর প্যালেস্টাইন' কর্মসূচির প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তারা ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, পতাকা তৈরি করছিলেন বটতলায়।  

ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী রায়ান ফেরদৌস তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, কর্মসূচির প্রস্তুতির সময় এরাবিক বিভাগের শিক্ষার্থী খালেদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সানি সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় ফিলিস্তিনের পতাকা আনতে টিএসসি যান। পথে রাজু ভাস্করের কাছে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে তাদের বিতণ্ডা হয়। অভিযোগ উঠেছে, ওই বিতণ্ডা থেকেই শুরু হয় ভুল বোঝাবুঝি, যা মুহূর্তে রূপ নেয় সহিংসতায়।

একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সানী সরকারের ওপর চড়াও হয়। হামলার শিকার হন তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরাও। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রায় ৫০-৬০ জনের একটি দল ‘ইসলাম বিদ্বেষী’ তকমা দিয়ে হামলায় অংশ নেয়। মারধরের পর সানীকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার মাথায় সিটিস্ক্যান ও এক্স-রে করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত হলেও শারীরিকভাবে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তাওহীদি জনতা রাজু ভাস্কর্যে কালো পতাকা লাগাতে গেলে এক শিক্ষার্থী বাধা দেন। পরে উত্তেজিত জনতা তাকে ইসলামবিদ্বেষী হিসেবে চিহ্নিত করে মারধর শুরু করে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘটনায় কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের একাংশ এই সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে লিখেছেন, ‘ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়াতে গিয়ে আমরা নিজেরাই নিজেদের সহযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাচ্ছি।’

ঢাবির শিক্ষার্থী রায়ান আরও লেখেন, আজকে আমরা আরেকটা তফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হতাম, যদি সানী বেঁচে না ফিরতো। এবার ভিক্টিম ঢাবির শিক্ষার্থী, তাই হয়তো এদেশের মানুষের মায়া কম লাগবে।