Image description

 ইবি প্রতিবেদক  
আরটিএনএন: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ইকসু) গঠনের দাবিতে গণস্বাক্ষর গ্রহণ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন ইকসু গঠন আন্দোলনের নেতারা। আগামীকাল শনিবার (২৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। এ সময় ইকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা না হলে সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হামিদুর রহমান মিলনায়তনের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় ইকসু গঠনের দাবিতে করা সংবাদ সম্মেলন এসব কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী বোরহানউদ্দিন। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দকে আমরা দেখেছি বিভিন্ন দাবি-দাওয়া উপস্থাপনের পাশাপাশি গুরুত্ব সহকারে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ইকসু গঠনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিতে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইকসু গঠনের জন্য কোন পদক্ষেপ তো নেয়ইনি, বরং বারবার আইনের দোহাই দেখিয়ে ইকসু গঠনকে থামিয়ে দিয়েছে। 

তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের অচলায়তন ভেঙে যেভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং রাকসু নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ গঠন এবং নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। আপনাদের জ্ঞাতার্থে আমরা জানাতে চাই, যে আইনের দোহাই দেখিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইকসু গঠনে রাজি হচ্ছে না, একই ধরনের প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে না থাকা সত্ত্বেও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বেরোবি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা এটা বলতেই পারি, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চাইলে যে কোন যৌক্তিক বিষয়ই অর্জন করা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্র সংসদের মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য একটি দাবি মেনে নিতে অবশ্যই বাধ্য হবে।

বোরহানউদ্দিন বলেন, বারবার আলোচনার টেবিলে দাবি জানিয়েও যেহেতু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইকসু গঠনে কোন পদক্ষেপ নেয়নি, তাই আমরা এবার থেকে রাজপথের ভাষায় ইকসু আদায়ের লক্ষ্যে একমত হয়েছি। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং কোনোমতেই এই অধিকার থেকে কোন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা চলবে না। ইকসু কোন একক ব্যক্তির বা একক সংগঠনের না, ইকসু আমার, আপনার এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ হাজার শিক্ষার্থীর। 

ইকসুর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছিলেন, তাদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই পারবে ইকসু বাস্তবায়ন করতে। চব্বিশের জুলাইয়ে আমরা ছাত্রজনতা যেভাবে একটি ঐক্যবদ্ধ ব্যানারে এক কাতারে এসে দাঁড়িয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের দাবি আদায় করেছিলাম, ঠিক সেভাবেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবাই এ ন্যায্য দাবি আদায় করতে পারব।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইবি শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক সাহেদ আহমেদ, শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট, ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আহমাদ গালিব, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত, খেলাফতে ছাত্র মজলিশ সভাপতি সাদেক আহম্মদ, আল ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব আল সজিব ও সায়েম আহমেদ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আহমাদ আল আলামিন, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী  জুলকারনাইন দোলনসহ শতাধিক শিক্ষার্থী।

সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলন থেকে চলে আসেন। এ বিষয়ে তারা জানান, সংবাদ সম্মেলন করা শিক্ষার্থীরা সবাইকে দাওয়াত করেছে। কিন্তু তারা ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের একবার বলছেন আহবান করেছেন, আরেকবার বলছেন করেননি। এটি যদি শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন হয়, তাহলে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি না থাকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা। ছাত্র সংসদের দাবির সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সব ছাত্র সংগঠনের নেতারা একাত্মতা  পোষণ করছেন বলেও জানান তারা।