Image description

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি 
আরটিএনএন: এক মাসের বেশি সময় জিম্মি দশার পর সোমালি জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত এমভি আবদুল্লাহ দেশের পথে রওনা হয়েছে। 

জাহাজ চলচাল পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা মেরিটাইম ট্রাফিক এর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলাবর ভোর ৪টার দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। 

 সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার বেলা ১টা ৪৫ মিনিটে এমভি আবদুল্লাহ আরব সাগরের ওমান উপসাগরে অবস্থান করছিল। 

জাহাজটি রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজাইরা বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সেখান থেকে জ্বালানি নিয়ে আবার চলতে শুরু করবে এমভি আবদুল্লাহ। 

জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া ফোকাল পার্সন মিজানুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এমভি আবদুল্লাহ দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।” 

জলদস্যুর কবলে পড়ার ৪৪ দিন পর দেশের পথে যাত্রা করল এমভি আবদুল্লাহ। আগামী ১২ মে জাহাজটি দেশে পৌঁছাতে পারে। জাহাজে ৫৬ হাজার মেট্রিক টন পাথর আছে।

এর আগে ২৭ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দর থেকে কাছাকাছি দূরত্বের মিনা সাকার বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল এমভি আবদুল্লাহ। 

সেখান থেকে জাহাজে পণ্য তোলার পর রোববার দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা সেদিন মালিকপক্ষ জানালেও তা সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার ভোরে রওনা হয়েছে এমভি আবদুল্লাহ। 

এমভি আবদুল্লাহ শনিবার পর্যন্ত ছিল সংযুক্ত আর আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে। সেখানে জাহাজে থাকা কয়লা খালাস করা হয়। 

এরপর শনিবার দুবাইয়ের আল-হামরিয়া বন্দরের জেটিতে থাকা এমভি আবদুল্লাহতে কার্গো (পণ্য) লোড করা শেষ হয়। সেখান থেকে মিনা সাকার বন্দরে যায় জাহাজটি।  

তার আগে ২২ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে ভেড়ে এমভি আবদুল্লাহ। তখন সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফরসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং জাহাজ পরিচালনাকারী এসআর শিপিংয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ২১ এপ্রিল এমভি আবদুল্লাহ ওই বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়।

গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। অস্ত্রের মুখে জাহাজ ও এর ২৩ নাবিককে জিম্মি করা হয় বলে জানায় মালিকপক্ষ।

এর ৩৩ দিন পর ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত ৩টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজ ছেড়ে চলে যায়। এরপর গন্তব্য দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় জাহাজটি।

১৪ এপ্রিল দুপুরে এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের দেওয়া ফেইসবুক পোস্টের একটি ছবিতে মুক্ত নাবিকদের পাশে ইউরোপীয় নেভাল ফোর্সের অপারেশন আটলান্টার কমান্ডোদের দেখা যায়।

তারপর ১৫ এপ্রিল বিকেলে অপারেশন আটলান্টা মিশন তাদের টুইট বার্তায় এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ছবি প্রকাশ করে।

ওইদিন রাতে কবির গ্রুপ তাদের প্রতিবেদনে জানায়, নিরাপদ এলাকায় না পৌঁছানো পর্যন্ত ইউরোপীয় নেভাল ফোর্সের যু্দ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাবে।

সোমালি উপকূল পেরিয়ে এডেন উপসাগর হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছায় এমভি আবদুল্লাহ। এর মধ্যে মুক্তির পর প্রায় ৪৮০ নটিক্যাল মাইল উচ্চ ঝুঁকির এলাকা পার হতে হয়েছে জাহাজটিকে।