
বিনোদন ডেস্ক
আরটিএনএন: ইসরাইল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে গাজায় প্রবেশের অনুমতি না দিলেও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে চলমান যুদ্ধ এ বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবে গুরুত্বপূর্ণভাবে উপস্থিত থাকবে। উৎসবে প্রদর্শিত হবে একটি প্রামাণ্যচিত্র, যার নাম ‘পুট ইউর সোল অন ইউর হ্যান্ড অ্যান্ড ওয়াক’।
এটি নির্মাণ করেছেন ইরানিয়ান নির্মাতা সেপিদে ফারসি। প্রামাণ্যচিত্রটির প্রধান চরিত্রে আছেন গাজার ফটোসাংবাদিক ফাতিমা হাস্সুনা। যিনি সম্প্রতি ইসরাইলি বিমান হামলায় শহীদ হয়েছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের সময় থেকে নির্মাতা ফাতিমার সঙ্গে ভিডিও কলে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। তার ওপর ভিত্তি করেই এই প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করেন ফারসি। এই প্রামাণ্যচিত্রটি কান চলচ্চিত্র উৎসবের এক সাইডবার বিভাগে নির্বাচিত হওয়ার খবর ফাতিমা ১৫ এপ্রিল জানতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে ফাতিমার ফ্রান্সে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন তারা। ঠিক তার পরদিনই (১৬ এপ্রিল) একটি ইসরাই বিমান হামলায় ফাতিমা এবং তার পরিবারের ১০ সদস্য নিহত হন। কেবলমাত্র তার মা বেঁচে যান।
‘পুট ইউর সোল অন ইউর হ্যান্ড অ্যান্ড ওয়াক’ নির্মাতা সেপিদে ফারসি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস করেছিলাম ফাতিমা বেঁচে থাকবে এবং সে কানে আসবে, যুদ্ধ থেমে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা আমাদের ধরে ফেলেছে।’
ফাতিমা না থাকলেও কান উৎসবে এই চলচ্চিত্রটি দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছরও এই গাজার ওপর ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রভাব দেখা গিয়েছিল কানে। অভিনেত্রী কেট ব্ল্যাঞ্চেটের পোশাকে অনেকেই ফিলিস্তিনি পতাকার রঙের ইঙ্গিত দেখেছিলেন।
এ বছর উৎসবে আরো দুটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র থাকছে। এর মধ্যে অন্যতম গাজার যমজ ভাই আরব ও তারজান নাসারের ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন গাজা’। ২০০৭ সালে গাজার এক ফালাফেল দোকানে দুই বন্ধুর মাদক ব্যবসার গল্প নিয়ে নির্মিত। যেটি ‘আঁ সার্তে রিগা’ বিভাগে প্রদর্শিত হবে।
অন্যদিকে, ইসরাইলি পরিচালক নাদাভ লাপিদের চলচ্চিত্র ‘ইয়েস’ দেখানো হবে ‘ডিরেক্টরস ফোর্টনাইট’ বিভাগে। ছবিতে এক জ্যাজ সংগীতশিল্পীকে হামলার পর নতুন জাতীয় সংগীতের সুর তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
জনপ্রিয় অভিনেত্রী টিল্ডা সুইনটন চলতি বছরের শুরুতে বার্লিন উৎসবে বক্তৃতা দেন, যেখানে তিনি ‘আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থিত গণহত্যা’ এবং ‘রিভিয়েরা উন্নয়নের পরিকল্পনা’ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন—যা অনেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত হিসেবে দেখেছেন। কানের মঞ্চেও যে এবার আরো তীব্রভাবে ইসরাইলের আগ্রাসনের কথা আসবে, সেটা প্রায় অনুমেয়ই।
হামাসের ৭ অক্টোবর ২০২৩-এর হামলার জবাবে ইসরাইল যে সামরিক অভিযান শুরু করে, তাতে এক বছরের মধ্যে গাজায় মৃতের সংখ্যা ৫২ হাজার ৭৮৭-এ পৌঁছেছে। এদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেটিকে জাতিসংঘ নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচনা করে।
Comments